কবির সংজ্ঞা ও ভাবদ্বন্দ্ব এবং ভাব ঐক্য :

কবির সংজ্ঞা ও ভাবদ্বন্দ্ব এবং ভাব ঐক্য :

Size

Read more

 


কবির সংজ্ঞা ও ভাবদ্বন্দ্ব এবং ভাব ঐক্য :

কবিতার বিভিন্ন বৈচিত্র্যের মধ্যে একাধিক ভাবের দ্বন্দ্ব একটি অন্যতম প্রধান বৈচিত্র্য। কোন কবিতায় একটি মাত্র ভাব কবিতার সর্বাঙ্গে পরিব্যাপ্ত থাকে। কোন কবিতায় আবার দেখা যায় একাধিক ভাবের মিলন। রবীন্দ্রনাথের নৈবেদ্য কাব্যগ্রন্থের 'মুক্তি' বা 'অপ্রমত্ত' প্রভৃতি কবিতাগুলিতে আছে একটি ভাবের অনুরণন। কিন্তু 'বলাকা'র ‘শাজাহান' কবিতায় আছে বিপরীতমুখী একাধিক ভাবের মিলন। শেলীর ‘Adonais' কবিতায় প্রথমে আছে মৃত্যুর জন্য ক্রদন। কিন্তু এই শোকাবহ পরিণতি শেষ পর্যন্ত পরিণত হয়েছে অনন্তের আহ্বানজনিত মহাজীবনে। এই দুটিই পরস্পর বিপরীত ভাবধারা। অনেক সময় একটি প্রধানভাবকে অবলম্বন করে অনুষঙ্গ সূত্র ধরে অন্যান্য ভাবের বিকাশ ঘটে, কিন্তু পরিশেষে সব অনুষঙ্গ ভাবগুলি প্রধান ভাবের সঙ্গে মিলিত হয়ে কবিতার অখণ্ডতা বজায় রাখে। যেমন—রবীন্দ্রনাথের 'অহল্যার প্রতি' কবিতাতে অনুষঙ্গ সূত্রে এসেছে নানা প্রকারের ভাব। প্রথম স্তবকে পাষানময়ী অহল্যার মধ্যে কোন অনুভূতির স্পন্দন ছিল কিনা তা কবিতায় জানতে চাওয়া হয়েছে। অনুষঙ্গ রূপে এসেছে ঋষি গৌতমের পরিত্যাগ জনিত প্রতিক্রিয়া-রাত্রির নির্জনতায় পাষাণ হৃদয়ের অনুভূতি, রামচন্দ্রের স্পর্শে মুক্তি এবং পরে সব অনুষঙ্গ ভাব একত্রে মিলিত হয়ে কবিতার অখন্ডতা সৃজন করেছে।

তুমি বিশ্বপানে চেয়ে মানিছ বিস্ময়/বিশ্ব তোমা পানে চেয়ে কথা নাহি কয়— দোঁহে মুখোমুখি। অপার রহস্যতীরে/চির পরিচয় মাঝে নব পরিচয়।'

'Ode to the West Wind' বা 'Ode to Nightingale' এ বিভিন্ন ভাবের সম্মিলন ঘটে একটি সমন্বয় রূপ সৃজন করেছে। Judith O'Neill কীটসের নাইটিঙ্গেল কবিতার পূর্ণমূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছেন 'it (the poem) moves or twards and upwords towards life as strongly as it moves downwords towards extinction, the ode is, in fact, an extremely subtle and varied interplay of motions' কবিতাটি আরম্ভ হয়েছে

'My heart aches and a drowsy umbress pains

My sense, as though of hemlock I had drunk, or emptied some dull opiate to the drains One minute past, and lethe wards had sunk Tiss not "hrough envy of thy happy lot, But being too happy in thine happiness, That thou, light winged Dryad of the trees, In some melodious plot of beechen greenys and shadows numberless Singest of summer in full throated ease.'

প্রথম ছত্রেই আছে ‘Numberless shadows'-এর উল্লেখ। প্রথমেই আছে Lethe wards-এর drugged movement (Drowsy, numb, Gull). a drowsy numbness pains my sense'-এর মধ্যেই রয়েছে direction change এর ইঙ্গিত। "Light winged সেই ইঙ্গিতের গুঢ় প্রকাশক। আবেগ পরিবর্তিত হয় জীবনের পথ ধরে। এই ভাবে এগিয়ে চলে কবিতা। প্রথম stanza-র বিপরীত গতি বা ভাবনা চিহ্নিত রেছে দ্বিতীয় ছত্রে 'with beaded bubbles winking at the brim'। মানব জগতের জীবনে বনে আবর্তিত হয় 'Dance and Provencal song and sunburnt mirth.'

এই ভাবে আবেগে ও কল্পনার মাথায় ভর করে কবি দৃশ্য হতে দৃশ্যান্তরে, বিষয় হতে বিষয়াত্তরে পরিভ্রমন করে অবশেষে ফিরে আসেন,

'Forlorn! the very word is like a bell

To toll me back from thee to my sole self!

 Adieu! the fancy cannot cheat so well

As she is fam'd to do, acceiving elf'

The song that fades away is no longer an ecstasy, but a plaintive anthem' কবিতা এখানে অখণ্ডতায় পরিণত। সমগ্রতা নিয়েই এই অখণ্ডরূপ, যেমন শেলী তাঁর West Wind কবিতায় প্রার্থনা জানিয়েছেন, 'make me thy lyre'। দৃশ্য হতে দৃশ্যান্তরে, ভাব হতে অন্যতর ভাবে পরিভ্রমণ করে রোমান্টিক শেলীর অনুভূতি প্রকা মন moral এবং social regeneration প্রার্থনা করেছেন যাতে যুগের 'decay' এবং darkness বিলুপ্ত হয়। কবিতার মধ্যে অনুষঙ্গী বিভিন্ন ভাব প্রধান ভাবের সঙ্গে একত্র হয়ে কবিতার অখণ্ডতার জন্ম দিয়েছে।

একটি ভাবের অনুষঙ্গী ভাব হিসাবে বা বিপরীতমুখী ভাব সমূহের মধ্যে কবি কিভাবে কবিতার অখন্ডতা বিষয়ে সামঞ্জস্য রক্ষা করেন সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন সূত্র নেই। কল্পনায় বিচিত্র আবেগেই বিভিন্ন আবেদন কবিতায় ভিড় করে বুদ্ধি, যুক্তি, মনন এভৃতির সাহায্যে কবির মানস জগতে গ্রহণ ও বর্জনের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং এই প্রক্রিয়ার দ্বারাই প্রকৃত অনুভূতি কবিতার ভাববস্তুতে পরিণত হয়। Benedetto Croce তাঁর 'Aes thetic as science of Expression and General Linguistic' গ্রন্থে 'intuition'-এর কথা বলেছেন। Intuition হল স্বতঃস্ফূর্ত গান বা স্বজ্ঞা। তিনি স্বজ্ঞা ও প্রকাশকে আলাদা করে দেখো নি। (The one appears with the other at the sarne instant, because they are not two, but one)। পরে অবশ্য হাইডেলবার্গ বক্তৃত। মালায় (Heidelberg lectures) তিনি intuition কে গভীরতর অর্থে প্রয়োগ করে বলেছেন যে intuition অর্থে বোঝায় ‘successful union of poetic image with an emotion'। কবি যেহেতু সামাজিক মানুষ বহির্জগতের বস্তু বিশেষ তাঁর মানস জগতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এই প্রতিক্রিয়াই কবির sensation যদিও তা এলোমেলো এবং অবিন্যস্ত রূপে কবির মানস জগতে বিরাজ করে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কবির পার্থক্য এই যে তিনি সজ্ঞা বা Intuition এর দ্বারা এলোমেলো ভাবে অবিন্যস্ত sensation বা সংবেদন গুলিকে একটা নির্দিষ্ট সামস্যের মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন। এই সামঞ্জস্যের ফলে sensation গুলি শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে একটা রুপ পরিগ্রহ করে এবং কবিতায় এই 'রূপ' প্রকাশ পায়। তাই শৃঙ্খলাবদ্ধ রূপই প্রকাশ, শৃঙ্খলাহীন অবিন্যস্ত সংবেদন কখনও অখণ্ডরূপ প্রকাশ করতে পারে না। মহৎ কবিতা মাত্রেই চৈতন্যের অবদান যদিও আন্তর প্রেরণা ও প্রকাশের মধ্যে একটা ব্যবধান থাকে। মহৎ কবিতা কখনই বস্তু নিরপেক্ষ নয়। ক্লোচে, হেগেল, কান্ট, হেনরী বার্গস প্রমুখ সকলেই বলেছেন যে, “Poetic intuition not as a creation out af nothing, but out of a material which is its prior condition.' কবির মনে সত্যানুভূতির যাবতীয় সদৃশ এবং বিসদৃশ বিষয় শৃঙ্খলাবৰ অবস্থাকে কোলরিজ তার Biographia Literaria তে বলেছেন, 'a more than usual state of emotion with more than usual order.' |

Intuition বা সজ্ঞা কে যদি কবির সত্য দর্শনের মেজাজ বা মর্জিরূপে ধরে নেওয়া যায়, সেক্ষেত্রেই কবির সঙ্গে অন্য কবির বা এক যুগ বা সময়ের সঙ্গে অন্য যুগ বা সময়ের পার্থক্যও থাকা সম্ভব। মহাজন পদাবলীতে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধার মধ্যে বৈষ্ণব কবিরা যে নিত্যলীলার ভক্তিরস আস্বাদন করতেন, আধুনিক যুগে রবীন্দ্রনাথই সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

‘সত্য করে কহ মোরে, হে বৈষ্ণব কবি/কোথা তুমি পেয়েছিলে এই প্রেমচ্ছবি কোথা তুমি শিখেছিলে এই প্রেমগান/বিরহ তাপিত। হেরি কাহার নয়ান রাধিকার অশ্রু আখি পড়েছিল মনে।............. বৈষ্ণব কবিতা / সোনারতরী কবিতার সত্য হল কবির মর্জি বা মেজাজ প্রসূত যা 'প্রকৃত' বলে মনে হয়। বিশেষ একটা রূপ যখন কবির মেজাজে বা মানস জগতে লালিত হয়ে প্রকাশ পায় তাই কবিতা এবং ভাববস্তুই কবিতার সত্য। 'সনেট পঞ্চাশৎ এ প্রমত্ চৌধুরী লিখেছেন, শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ভাষার মাধ্যমে অখন্ড অত্যানুভূতির প্রকাশ ঘটায়। এই ক্ষেত্রে যুক্তিসিদ্ধ অবস্থা বর্জন করে প্রতীকী দ্যোতনায় নন্দিত হয়। 'কবিতার যত সব লাল নীল ফুল/মনের আকাশে আমি সযত্নে ফোটাই তাদের সবারি বা পৃথিবীতে মূল/মনো খুটি বুঁদ হলে ছাড়িলে লাটাই।'

সেগুলি পরস্পরের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হয়ে একটি নতুন ইমেজ গঠা করেনি। ঐ কবিতার অন্য একটি অংশ কিন্তু imagination পরিপূর্ণ রূপে বিদ্যমান।

'Look! how a bright star shooteth the sky

So glides he in the night from venus, eye'.

ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও কোলরিজের মধ্যে Fancy' র গুরুত্ব বিষয়ে কিছুটা মত পার্থক্য আছে ওয়ার্ডসওয়ার্থ fancy কে 'creative faculty' বলেছেন। তাঁর মতে fancyর দ্বারা প্রাপ্ত ইমেজের উপর imagination বা কল্পনা কাজ করে।

বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে কবিতা সম্বন্ধীয় কোন কথাই বলা যায় না। রবীন্দ্রনাথ নিজেকে রোমান্টিক কবির আখ্যায় ভূষিত করেছেন। অন্তত ‘সোনার তরী', 'নিরুদ্দেশ যাত্রা' ও 'মানস সুন্দরী' কবিতা আলোচনা করলে পাশ্চাত্যের রোমান্টিক কবিদের সঙ্গে তিনি যে সমগোত্রীয় তা মানতেই হবে। বিশেষ করে ওয়ার্ডসওয়ার্থ, শেলী ও কীটস এর রোমান্টিক চিন্তার ধারা তাঁর মধ্যে একত্রে সন্নিবেশ ঘটেছে। শেলীর মতই তাঁর জনপ্রীতি। বলেছেন 'নদীর পালিত এই জীবন আমার 'সোনার তরীতে আছে নদীর চিত্রকল্প, ‘গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে'। মোহিত লাল বলেছেন যে প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথের কাছে ছিল প্রাণময়ী –কখনও জননী, কখনও বা প্রেয়সী প্রকৃতির সৌন্দর্যে তাঁর আত্মমগ্ন উপলব্ধি ওয়ার্ডসওয়ার্থের প্রকৃতি চিন্তার অনুরূপ। কবি কীটস এর মতই তিনি সৌন্দর্যের পূজারী। কীটস যেমন বলেছিলেন 'beauty is truth, truth beauty', রবীন্দ্রনাথও তেমনই বলেছেন যে জগতে সৌন্দর্যই শ্রেষ্ঠ। মানস সুন্দরী কবিতায় তিনি লিখেছেন :

“আজ কোনো কাজ নয়। সব ফেলে দিয়ে/ ছন্দো বন্ধ গ্রন্থগীত, এসো তুমি প্রিয়ে, আজন্ম সাধনধন সুন্দরী আমার/ কবিতা কল্পনালতা..........

শেলীর হিম অব এশিয়ার সমতুল্য রবীন্দ্রনাথের নর্ম সুন্দরী। সৌন্দর্য লক্ষ্মীর বর্ণনায় শেলীর মতই তিনি বলেন 'জগতের মাঝে কত বিচিত্র তুমি হে/ তুমি বিচিত্র রুপিনী।' কীটস জন্ম রোমান্টিক বলেই তাঁর কবিতায় Fairy fancy বা লঘুকল্পনাবিলাসের আধিক্য। কিন্তু রবীন্দ্রনাথে প্রেম একটি তত্ত্ব—চির কল্যানময়ী একশক্তি। প্রেমের অমরাবতী রচনার স্বপ্ন যৌবনের, কিন্তু যতই পরিণত জীবনে উপনীত হয়েছেন ততই প্রেমকে ইন্দ্রিয়াতীত হওয়ার সাধনায় প্রয়োগ করেছেন।

‘পঞ্চ শরে ভষ্ম করে করেছ একি সন্ন্যাসী /বিশ্বময় দিয়েছ তারে ছড়ায়ে'। (মদন ভষ্মের পরে)। তবে কীটসের কল্পনার সঙ্গে তার মিল আছে 'the fancy cannot cheat so well'. রোমান্টিক অতীতচারিতায় তিনি গৌতমের মুখ দিয়ে ব্রাহ্মণত্বের সংজ্ঞা নির্ণয় করেছেন, উর্বশী হয়েছে সৌন্দর্য্যের দেবী, গান্ধারী, কুস্তি ও কর্ণের কথোপকথনে নতুন সত্যকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু রন্ধ্রে রন্দ্রে তাঁর কালচেতনা প্রাচীন স্বর্গ হতে মানুষের জগতে ফিরিয়ে এনেছে।

‘থাকো স্বর্গ হাস্য মুখে কর সুধা পান দেবগন। স্বর্গ তোমাদেরই সুখ স্থান'।

রবীন্দ্রনাথ এক অসীম মহাসাগর। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যত কবি তার বিশেষ বিশেষ সময়ের একটি সবিশেষ প্রবাহ। তাঁর অন্তর দেবতা লীন হয়ে আছে প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে (বসুন্ধরা), কখনও উপনিষদীয় তত্ত্বের 'বড় আমি ছোট আমির' দ্বন্দ্ব (ঝুলন), আবার কখনও জীবন দেবতার অন্বেষণ, ‘দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে। কখনও সে অন্তর প্রেরণা (অন্তর্যামী), কখনও বা 'কল্পনা বালা' (কবিকাহিনী)। সাধারণের মধ্যে বার্ধক্যে মন অধ্যাত্মবাদী হয়, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ শেষ বয়সে পুনরায় মর্ত্যে পদচারণা করেছেন, আহ্বান জানিয়েছেন সংগ্রামী মানবতার কবিকে, 'এসো কবি, অখ্যাত জনের/নির্বাক মনের মর্মের বেদনা যত করিয়ো উদ্ধার।

বাংলার রূপকে জীবনানন্দ বিশ্ব পৃথিবীর রূপের মধ্যে মিশিয়ে বলেছেন, 'বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ/খুঁজিতে যাই না আর'। এ এক কল্পনাজারিত বোধশক্তি যার দ্বারা গ্রাম বাংলা ঐতিহ্যমণ্ডিত হয়ে রূপ নিয়েছে রূপসী বাংলায়। তাঁর কবিতায় উপমা ও রূপক অনুভূতিপ্রসূত, অনেকটাই কবি কীটস বা প্রির‍্যাফেলাইটদের মত চিত্ররূপময়। সাদৃশ্য খুঁজে বেড়ানো কল্পনার ধর্ম নয়। সাদৃশ্যযুক্ত দুটি বা একাধিক বস্তুকে ভেঙে নতুন করে ভিন্নরূপে প্রকাশ করাই কল্পনার ধর্ম। প্রমথনাথ রায়চৌধুরীর কবিতার কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করা যেতে পারে : সংসার ছেড়ে পালিয়ে এলে কবি/লোকালয়ের প্রান্তে বাঁধা বাসা। সেথায় অষ্টপ্রহর কোলাহল/ভাবলে হেথায় স্তব্ধতা কি খাসা। কোয়াশা থেকে আবছায়া ভাব নেবো /কুঞ্জ ছেঁকে নবরসের সুধা করুণার সুরে বাঁধবো ভাষার তার,/মিটিয়ে দেবো ভবের কাব্যক্ষুধা। চাঁদ থেকে উপমার ফাঁদ বুনে/ গড়ে তুলবো ঘন স্বপন জাল মেঘের স্তবক ভেঙ্গে রূপক নিয়ে/কল্প ডিঙায় উড়িয়ে দেবো পাল। শেষের দিকে আছে,

বুঝলে কবি মানবতা বিনা/রসের সৃষ্টি চোখ ভুলান আখর, হৃদয় রঙের রং ফলে না যাতে/ সে সব ছবি তুলির ঝাপসা আঁচড়'। কল্পনাই রূপকে আশ্রয় নেয়, হৃদয় রঙের রং ফলায়, ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য বস্তুকে 'ঘ' স্বপন জালের' মধ্য দিয়ে নতুন রূপে প্রতিভাত করে।


0 Reviews