Read more
Existentialism বা অস্তিত্ববাদ বা অস্তিবাদ
Existentialism বা অস্তিবাদ দর্শন বিষয়ক কোন তত্ত্ব বা তত্ত্বের সমষ্টি নয়, এ একধরণের দর্শন চিন্তা যার বীজ জার্মান রোমান্টিসিজমের মধ্যেই নিহিত ছিল এবং যার উদ্ভব ঘটেছে এডমণ্ড হুর্সাল-এর Phenomenologe বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ঘটনা বা বস্তুবাদ হতে। অস্তিবাদী চিন্তার কেন্দ্র বিন্দু হল মানুষের অস্তিত্ব বিষয়ক চিন্তা, তার স্বাতন্ত্র্য, বিচার পদ্ধতি ও অভিজ্ঞতার স্বরূপ সন্ধান (the Primacy of the individual and
of individual choice over the system and concepts which attempt to explain to
him) | অস্তিবাদী দর্শন চিন্তায় যুক্তিবাদী তত্ত্ব জিজ্ঞাসা উপেক্ষিত, বিশ্বতত্ত্ব সম্বন্ধীয় পরমতত্ত্বে এঁরা বিশ্বাসী নন। প্লেটো ও হেগেল প্রমুখ যুক্তিবাদী দার্শনিকেরা মানুষের যে সারধর্ম বা essence এর কথা বলেছেন, এঁরা তাও অস্বীকার করেন এই যুক্তি দেখিয়ে যে 'existence precedes essence'। এ দর্শন চিন্তা ব্যক্তির, বিষয়ের নয়, ভাববাদের নয় হৃদয়াবেগের। প্রকৃতিবাদ মানুষকে দেখেছে জড় জগতের অংশ বিধায়ে যান্ত্রিক নিয়মের ক্রীড়নক রূপে, আর ভাববাদীরা মানুষকে ভেবেছে পরমসত্তার অংশ রূপে। অস্তিবাদী দর্শন চিন্তা এই দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বলে যে মানুষের অস্তিত্ব সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ঊনবিংশ শতকে ডেনমার্কের সোরেন কিয়ের্কেগার্দ (Soren Kierkegaard 1813-55) অস্তিবাদী দর্শনের সুত্রপাত করে তাঁর Either or গ্রন্থে বলেন যে তত্ত্বের সন্ধান নয়, দর্শনের কাজ জীবনকে উপলব্ধি করা, তার অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হওয়া। মানুষ সততই বিকাশমান যা তার অবিরাম প্রচেষ্টা ও অন্তর আকাঙক্ষা হতে উদ্ভূত। এই প্ৰচেষ্টা ও ইচ্ছা এবং সম্পর্কের জন্যই সে অস্তিত্বশীল।
এরপর অস্তিত্ববাদের বিকাশ ঘটে জার্মানি ও ফ্রান্সে। জার্মানীর মার্টিন হাইডগার (Martir. Heidegger-1889-1976 )
Thrownness' কথাটি ব্যবহার করে মানুষকে অস্তিত্বরূপ অবস্থার মধ্যে পতিত হওয়া প্রাত্যহিক জীবনের সাধারণ নামহীন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন বলে দাবী করেছেন। সে তার মধ্যে নিহিত সম্ভাবনাকে সার্থক করে তুলতে প্রচেষ্ট হয়। সে অনুভব করে যে মৃত্যু নিশ্চিত, কিন্তু তার সময় অনিশ্চিত। এই অনিশ্চয়তা বোধ হতে আসে উদ্বেগ এবং ক্রমে শূন্যতা। এই শূন্যতার মধ্যেই মানুষ তার সত্তাকে উপলব্ধি করে এবং বুঝতে পারে যে সে এই জড় জগতে অস্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ যার জীবন জগৎ ঘটনার সঙ্গে অচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা। তাঁর এ তত্ত্ব হেগেলীয় দর্শনের প্রতিবাদ। হাইডগার ঈশ্বর সম্পর্কে উদাসীন, কিন্তু কার্ল ইয়াসপার্স ঈশ্বর প্রত্যয়ী (Karl Jaspers- 1883-1969)। ইয়াসপার্সের মতে মানুষের Authentic self পারমার্থিক সত্তা বা Absolute self এর অধীন বলে মানুষ পুরোপুরি স্বাধীন নয়। পারমার্থিক সত্তার প্রত্যক্ষ দর্শন হয় না, দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে এই সত্তার উপলব্ধি ঘটে এবং প্রতীকের মাধ্যমে তা প্রকাশ পায়। সুতরাং অস্তিবাদীরা দুদলে বিভক্ত। একদল ঈশ্বর বিশ্বাসী যেমন কিয়ের্কেগার্দ ও ইয়াসপার্স। অপর দল ঈশ্বর সম্পর্কে উদাসীন যেমন হাইডগার, নীৎসেও জাঁপল সার্ত্র। সার্ত্র অস্তিত্ববাদের প্রবর্তক নন, প্রচারক মাত্র। সার্ত্রের মতে “Consciousness of our freedom is the
sign of 'authentic experience'; as opposed to the 'bad faith' of believing
oneself bound' স্বাধীনতা তার Being for সত্তার সঙ্গে অভিন্ন। সে পরাধীন নয়। স্বাধীন এমন উপলব্ধিই তার ইচ্ছাশক্তি ও কর্মপ্রচেষ্টার জন্ম দেয়। স্বাধীনতার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে উদ্বেগের, কেননা কমই কর্মফলের প্রদাতা। তাই অনিশ্চিতের যন্ত্রণা, দায়িত্বের উদ্বেগকে সে এড়াতে পারে না। তবু স্বাধীনতার মধ্যেই রয়েছে অস্তিত্বের বিদ্যমানতা। মৃত্যুর মধ্যে জীবনের পরিণত রূপের যে কথা হাইডগার বলেছিলেন, সার্ত্র তার বিরোধিতা করে বলেছেন যে মৃত্যুতে জীবনের অবসান। তার আর পর নেই। সার্ত্রের দর্শনের মোট কথা হল “Investigation of freedom involves
investigation of nature of being and this has caused existentialism to form two
main streams; the first atheistic which interprets the free individual
existence as self created and the second religious, which interprets individual
existenc as dependent on transcendent Being সাহিত্যে অস্তিবাদী চিন্তাকে উপন্যাস ও নাটকের ক্ষেত্রে যতটা প্রয়োগ করা হয়েছে, কবিতায় সে পরিমাণে হয়নি। জীবন ও অস্তিত্বের সংকটও তার স্বরূপ সন্ধান এবং সামাজিক কবি বার্নস এর ‘A man's a man for a that' কবিতায় ভৌগলিক সীমার ঊর্ধ্বে মানবতার জয়গান গাওয়া হয়েছে। অতীন্দ্রিয় জগতের অধিবাসী উইলিয়ম ব্রেক তাঁর ‘Songs of Innocence' এবং 'Songs of Experience'-এ রূপের মধ্যে অরূপের সন্ধান করেছেন, ফুটে উঠেছে মানবাত্মার জ্যোতির্ময় রূপ। ‘The Everlasting Mercy'-তে তিনি যীশুর উদ্দেশ্যে প্রণাম জানিয়েছেন। 'Songs of Innocence'-এ আছে মাতৃহৃদয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও ব্যাকুলতা, অন্যদিকে ‘Songs o` Ex- perience'-এ নন্দনকে শ্মশানে পরিণত করার জন্য বিপদ এবং মোহমূক্তির আভাস।
রোম্যান্টিক ভাবধারার বিকাশে এ সময়ের উপন্যাসগুলিও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ য়ে ওঠে। রিচার্ডসনের Pamela, Clarissa ও Sir Charles Grandison, গোল্ডস্মিথের ‘The vicer of wakefield,' ষ্টারনি'র 'A Sentimental Journey', হেনরী মেকেঞ্জী'র ‘The Man of Feeling' এবং হেনরী ব্রুক-এর ‘Juliet Grenville' প্রমুখ উপন্যাসগুলি রোম্যান্টিক ধারণার বার্তাবহ। এ প্রসঙ্গে গথিক নভেল, শেক্সপীয়রের রোম্যান্টিক কমেডি এবং Prevost, Rousseau এবং Goethe'র উপন্যাসগুলির অবদানও কম নয়। রোম্যান্টিক আন্দোলনের পূর্বাভাস ছিল অষ্টাদশ শতকের সাতের দশকে জার্মানিতে উদ্ভূত ‘Sturm und Drang' আন্দোলনের মধ্যে। এই আন্দোলনের মুখপাত্র হার্ডার, শীলার, গ্যেটে এবং লেঞ্জ। এঁরা প্রধানতঃ ক্লাসিসিজম বিরোধী ও জাতীয়তাবাদী। জার্মান রোম্যান্টিক মতবাদীদের দুটি প্রজন্মকে বলা হয় Early Romantics এবং High Romantics ফ্রান্সের Madame de stael উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের ফরাসী সাহিত্যে দুটি বিপরীত ভাবধারা লক্ষ্য করে উত্তরাঞ্চলের সাহিত্যকে মধ্যযুগীয় খ্রীস্টান ও রোম্যান্টিক সাহিত্যরূপে এবং দক্ষিণাঞ্চলের সাহিত্যকে ক্লাসিক্যাল ও পেগান সাহিত্যরূপে চিহ্নিত করেছেন। মূলত ফ্রান্সে রোমান্টিকতার প্রস্তুতি শুরু হয় Lamartine, Victor Hugo-এর Vigny'র প্রচেষ্টায় এবং পরবর্তী সময়ে de Musset 3 Dumas-এর লেখনীতে তা পূর্ণত্ব প্রাপ্ত হয়।
0 Reviews